প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: রামু উপজেলার খুনিয়াপালং সংরক্ষিত বনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) একটি আবাসিক প্রশিক্ষণ একাডেমি করতে যাচ্ছে । সরকার ইতোমধ্যে সংরক্ষিত বনের ২০ একর জায়গা ডি-রিজার্ভ করে বাফুফেকে বরাদ্দ দিয়েছে।
যা অত্যান্ত দুঃখজনক বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা কলিম উল্লাহ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক এইচ এম নজরুল ইসলাম।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার প্রধান একদিকে বনভূমি রক্ষা নদী জলাশয় ডোবা দখলের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করলেও মাঠ পর্যায়ে তার ঠিক উল্টোটা প্রয়োগ হচ্ছে।
সরকার প্রধান বনভূমি রক্ষা করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের কথা জোর দিয়ে বললেও কক্সবাজারে একের পর এক বনভূমি দখল নয়তো লিজ নিয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা বনভূমি ধ্বংসে মেতে উঠেছে যা দুঃখজনক ও নিন্দানীয়।
কক্সবাজারকে ঘিরে একের পর এক পাহাড় প্রকৃতি ধ্বংসের আয়োজন চলছে।
প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস করে যারা উন্নয়নের মিথ্যা ফুলঝুরি দেখাচ্ছে ওরা কেউ আসল দেশ প্রেমিক হতে পারে না।
কক্সবাজারবাসী পাহাড়, প্রকৃতি,নদী নালা,সমুদ্রের বালুচর দখল করা উন্নয়নকে ঘৃণা ভবে প্রত্যাক্ষান করছে।
বাপা নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, খুনিয়াপাংয়ে (বাফুফে) আবাসিক প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপনে কাটা পড়বে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এই বনের প্রায় ৩০ হাজার ছোট বড় গাছ। এই বন আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণের জোট আইইউসিএনর তালিকাভুক্ত মহাবিপদাপন্ন এশিয়ান হাতির আবাসভূমি। এছাড়া এ বনে হরিণ, বন্যশুকর, বানরসহ অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদ ও পাখি রয়েছে। এমনিতে সংকুচিত হয়ে আসছে কক্সবাজারের বনভূমি। কক্সবাজারের বন বিভাগের ২ ডিভিশন মিলে বনভূমি রয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৫৭ একর। এমন সময়ে এ বনভূমি দেওয়া হচ্ছে যখন কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়নে ৭ হাজার একরের বেশি বনভূমি বেহাত হয়ে গেছে। এ ছাড়া, প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে প্রায় ৫০ হাজার একরের মতো বনভূমি। সমতলে এ একাডেমি নির্মাণ করার জন্য যথেষ্ট ভূমি থাকলেও বাফুফে এ বনকে নির্বাচন করেছে। জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থে সরকার চাইলে বন আইন-১৯২৭ এর ২৭ ধারায় বনভূমি ডি-রিজার্ভ করতে পারে। তবে সেটা হতে জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থে। এরপরও বনের জায়গায় কেন প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রশ্ন রাখেন প্রশাসনের কাজে।
অবিলম্বে ২০১৯ সালে কক্সবাজারের কোনো বনভূমি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থাকে বরাদ্দ না দিতে উচ্চ আদালত সরকারকে দেওয়া নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবী জানান।
এছাড়া সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্র বনাঞ্চল, জীব বৈচিত্র্যসহ সার্বিক পরিবেশ বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রক্ষা করার দায়িত্বও সরকারের।
তাই সংবিধান মেনে কক্সবাজারে অতিতে যে সকল সরকারি বেসরকারি সংস্থাকে বনভূমি লিজ দিয়েছে তা বাতিল করারও দাবি জানানো হয়।
পাঠকের মতামত: